স্বদেশ ডেস্ক:
বাড়ির কাজের ছেলের সঙ্গে এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু সে সম্পর্ক মেনে নিতে নারাজ ওই কিশোরীর বাবা ও ভাই। তাই তাকে আটকে রাখা হয় ঘরে। কিন্তু সুযোগ পেয়েই মেয়ে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে। পরে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
ওই কিশোরীর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার গণেশপুর ইউনিয়নের ভেবড়া গ্রামে। প্রেমিক আবদুল খালেকের বাড়িও একই গ্রামে। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করে ওই কিশোরী। এ সময় প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না হলে আত্মহত্যার হুমকিও দেয় সে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই কিশোরীদের বাড়িতে কাজ করতেন আবদুল খালেক। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে কিশোরীর সঙ্গে খালেকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু খালেক দরিদ্র হওয়ায় প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না মেয়ের বাবা এবং বড় ভাই। খালেকের বাড়িতে এর আগেও বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় ওই কিশোরী। তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সুযোগ পেয়ে শনিবার সকাল থেকে প্রেমিক আবদুল খালেকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় ওই কিশোরী। প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না হলে আত্মহত্যা করবে বলেও হুমকি দেয় সে।
ওই গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘তাদের প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এলাকার সবাই তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা জানে। মেয়ে তার নিজের ইচ্ছায় খালেকের বাড়িতে এসে অবস্থান নিয়েছে। ছেলের পরিবার গরিব হওয়াটাই ওদের সম্পর্কের বড় বাধা।’
অনশনরত কিশোরী বলে, ‘আমাদের বাড়িতে কাজ করার সুবাদে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই আবদুল খালেকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু তারা গরিব হওয়ায় আমার বাবা ও ভাই এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। তার সঙ্গে বিয়ে না দিলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’
ছেলের মা ময়না বলেন, ‘শনিবার সকাল ৬টার দিকে মেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে অবস্থান নেয়। তাদের দুজনের সম্পর্ক আছে। আমরা গরিব বলে তার বাবা ও বড় ভাই সম্পর্ক মেনে নিতে চায় না। বরং মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
কিশোরীর বাবা আবদুল আলী শেখ বলেন, ‘মেয়ে ছোট মানুষ। এসব আর কী বুঝবে। তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। তার মোহ কেটে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। বাবা হয়ে তো আর তাকে ডোবাতে পারি না।’
এ বিষয়ে মান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’